রূপসী এক শকুনি
লেকটি নিয়ে এলাকাবাসীর ছিল অনেক স্বপ্ন। নতুন সাজে সেজেছে সেটি। দর্শনার্থীদের মুগ্ধতা এখন সেই লেক ঘিরে। লেকটির নাম ‘শকুনি লেক’। নতুনভাবে সাজার পর শকুনি লেকটি এখন শহরের বিনোদনপ্রেমীদের সবচেয়ে পছন্দের স্থান হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিদিন লেকটির চারপাশ ঘুরে দেখতে ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা। বিকেল হলে যেন এক মিলনমেলায় পরিণত হয় এ স্থান।
শকুনি লেক ঘুরে দেখা যায়, সকাল-বিকেলে একটু বিনোদনের আশায় পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকেই ছুটে আসেন শহরের কোল ঘেঁষে গড়ে ওঠা শকুনি লেকের পাড়ে।
মাদারীপুর পৌরসভা জানিয়েছে, ১৮৫৪ সালে শকুনি লেক খননের মধ্য দিয়ে মাদারীপুর শহরের পত্তন হয়। দীর্ঘ দিন অযত্ন-অবহেলায় তা পড়ে থাকে। ২০১৩ সালে ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে এর সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ শুরু করে পৌরসভা। এর সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। চলতি মাসে উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে। তবে এর আগেই লেক ঘিরে আনাগোনা চলছে দর্শনার্থীদের। সরকারি অর্থায়নে ‘শকুনি লেক’ প্রকল্প ঘিরে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল, শহীদ কানন, শিশুপার্ক, স্বাধীনতা অঙ্গন, এমপি থিয়েটার মঞ্চ, শান্তি ঘাটলা, পানাহারসহ মাদারীপুর ঘড়ি নামে একটি টাওয়ার। প্রতিবছর শকুনি লেকের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ লাখ টাকা।
উন্মুক্ত এই শকুনি লেক দেখতে প্রতিদিন ছুটে আসছেন দর্শনার্থীরা। লেকটিতে ঘুরতে আসা চৈতি সেন নামে এক দর্শনার্থী বলেন, ‘শকুনি লেকের কাছে আসলে মন আনন্দে ভরে যায়। এক অন্য রকম শান্তি অনুভব করি। সবুজ ও সতেজ পরিবেশ।’
মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলা থেকে আসা শাহাদত আকন নামে আরেক দর্শনার্থী বলেন, ‘বন্ধুদের নিয়ে প্রতি সপ্তাহে এ লেকে ঘুরতে আসি। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিই। গান গাই। আবৃত্তি করি।’
সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান সায়মা বলেন, ‘প্রতিদিন কলেজ শেষে এক ঘণ্টার জন্য শকুনি লেকের পাড়ে বসে অবসর সময় কাটাই।’
শকুনি লেক পর্যটন শহর হিসেবে জেলাকে পরিচয় করিয়ে দেবে বলে মনে করছেন মাদারীপুরের জাতীয় রবীন্দ্রসংগীত সম্মিলন পরিষদের সংগীতবিষয়ক সম্পাদক নন্দিনী হালদার। তিনি বলেন, ‘সৌন্দর্যবর্ধনের পর নতুন সাজে সেজেছে মাদারীপুরের ঐতিহ্যবাহী এই শকুনি লেক। সন্ধ্যা হলে নানা রঙের বাহার সত্যি মুগ্ধ করে। শকুনি লেকের কারণে জেলার আরও পরিচিতি বাড়বে।’